ন্যাড়া বেল তলা যায় ক'বার

রোদে রাঙা ইটের পাঁজা       তার উপরে বস্‌ল রাজা-
      ঠোঙা ভরা বাদাম ভাজা খাচ্ছে কিন্তু গিল্‌ছে না ।
গায়ে আটা গরম জামা      পুড়ে পিঠ হচ্ছে ঝামা ;
      রাজা বলে "বৃষ্টি নামা- নইলে কিচ্ছু মিলছে না ।"
থাকে সারা দুপুর ধ'রে      ব'সে ব'সে চুপটি ক'রে,
      হাঁড়িপানা মুখটি ক'রে আঁক্‌ড়ে ধ'রে শ্লেটটুকু ;
ঘেমে ঘেমে উঠছে ভিজে      ভ্যাবাচ্যাকা একলা নিজে
      হিজিবিজি লিখছে কি যে বুঝ্‌ছে না কেউ একটুকু ।
ঝাঁঝাঁ রোদ আকাশ জুড়ে,      মাথাটার ঝাঁঝরা ফুঁড়ে,
      মগজেতে নাচ্‌ছে ঘুরে রক্তগুলো ঝনর্‌ ঝন্‌ ;
ঠাঠা-পড়া দুপুর দিনে,      রাজা বলে, "আর বাচিনে,
      ছুটে আন বরফ কিনে- করছে কেমন গা ছন্‌ছন্‌ ।"
সবে বলে, "হায় কি হ্ল !       রাজা বুঝি ভেবেই মোলো !
      ওগো রাজা মুখটি খোলো- কওনা ইহার কারণ কি ?
রাঙামুখ পান্‌সে যেন       তেলে ভাজা আম্‌সি হেন,
      রাজা এত ঘামসে কেন- শুনতে মোদের বারণ কি ?"
রাজা বলে , "কেই বা শোনে      যে কথাটি ঘুরছে মনে,
      মগজের নানান কোণে- আনছি টেনে বাইরে তায়,
সে কথাটি বলছি শোন,      যতই ভাব যতই গোন,
      নাহি তার জবাব কোন কুলকিনারা নাই রে হায় ।
লেখা আছে পুঁথির পাতে,      "ন্যাড়া যায় বেলতলাতে,"
      নাহি কোনো সন্ধ তাতে- কিন্তু প্রশ্ন 'ক'বার যায় ?'
এ কথাটা এদ্দিনেও      পারে নিকো বুঝতে কেও,
      লিখে নিকো পুস্তকেও, দিচ্ছে না কেউ জবাব তায় ।
লাখোবার যায় যদি সে      যাওয়া তার ঠেকায় কিসে ?
      ভেবে তাই পাইনে দিশে নাই কি কিচ্ছু উপায় তার ?"
একথাটা যেমনি বলা       রোগা এক ভিস্তিও'লা
      ঢিপ্‌ ক'রে বাড়িয়ে গলা প্রণাম কর্‌ল দুপায় তাঁর ।
হেসে বলে, "আজ্ঞে সে কি ?       এতে আর গোল হবে কি?
      নেড়াকে তো নিত্য দেখি আপন চোখে পরিষ্কার-
আমাদেরি বেলতলা যে      নেড়া সেথা খেলতে আসে
     হরে দরে হয় ত মাসে নিদেন পক্ষে পঁচিশবার ।"
এই লেখাটি বার পড়া হয়েছে