কাঁদুনে

ছিঁচ্‌কাঁদুনে মিচ্‌‌কে যারা শস্তা কেঁদে নাম কেনে,
ঘ্যাঁঙায় শুধু ঘ্যানর ঘ্যানর ঘ্যানঘ্যানে আর প্যানপ্যানে-
কুঁকিয়ে কাঁদে ক্ষিদের সময়, ফুঁপিয়ে কাঁদে ধমকালে,
কিম্বা হঠাত্‍‌ লাগলে ব্যথা, কিম্বা ভয়ে চম্‌কালে ;
অল্পে হাসে অল্পে কাঁদে, কান্না থামায় অল্পেতেই,
মায়ের আদর দুধের বোতল কিম্বা দিদির গল্পেতেই-
তারেই বলি মিথ্যে কাঁদন; আসল কান্না শুনবে কে?
অবাক্ হবে থম্‌কে রবে সেই কাঁদনের গুণ দেখে !
নন্দঘোষের পাশের বাড়ি বুথ্ সাহেবের বাচ্চাটার
কান্নাখানা শুনলে বলি কান্না বটে সাচ্চা তার ।
কাঁদবে না সে যখন তখন, রাখবে কেবল রাগ পুষে,
কাঁদবে যখন খেয়াল হবে খুন-কাঁদুনে রাক্ষুসে !
নাইকো কারণ নাইকো বিচার মাঝরাতে কি ভোরবেলা,
হঠাৎ‌ শুনি অর্থবিহীন আকাশ-ফাটন জোর গলা ।
হাঁকড়ে ছোটে কান্না যেমন জোয়ার বেগে নদীর বান,
বাপ-মা বসেন হতাশ হয়ে শব্দ শুনে বধির কান ।
বাস রে সে কি লোহার গলা? এক মিনিটও শান্তি নেই?
কাঁদন ঝরে শ্রাবণ ধারে, ক্ষান্ত দেবার নামটি নেই !
ঝুমঝুমি দাও, পুতুল নাচাও, মিষ্টি খাওয়াও একশোবার,
বাতাস কর, চাপড়ে ধর, ফুটবে নাকো হাস্য তার ।
কান্নাভরে উল্‌টে পড়ে কান্না ঝরে নাক দিয়ে,
গিল্‌তে চাহে দালানবাড়ি হাঁ'খানি তার হাঁক্ দিয়ে,
ভূত-ভাগানো শব্দে লোকে ত্রাহি ত্রাহি ডাক ছাড়ে-
কান্না শুনে ধন্যি বলি বুথ সাহেবের বাচ্চারে ।
এই লেখাটি বার পড়া হয়েছে